করিডর নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংসদ থেকেই আসা উচিত: তারেক রহমান
“করিডর ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসা উচিত নির্বাচিত সংসদ থেকে, বিদেশিদের নয়” — তারেক রহমান
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক করিডর দেওয়ার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সরকার দেশের জনগণ কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের পরামর্শ বা আলোচনা করেনি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই ধরনের জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিদেশিদের পরামর্শে নয়, বরং দেশের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ থেকেই সিদ্ধান্ত আসা উচিত। কারণ, গণতন্ত্রে জনগণের প্রতিনিধিরাই নীতিনির্ধারণের আসল অধিকার রাখে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) ঢাকার নয়াপল্টনে জাতীয় শ্রমিকদলের আয়োজিত সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের স্বার্থই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত, এবং সেই স্বার্থকে উপেক্ষা করে নেওয়া একক বা বিদেশ-নির্ভর সিদ্ধান্ত কখনোই টেকসই হতে পারে না।
তিনি সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান সরকার বারবার সংস্কারের কথা বলছে, কিন্তু সেই সংস্কারে শ্রমজীবী, কর্মজীবী সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর অনুপস্থিত। দেশের আট কোটি শ্রমজীবী মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, অধিকার ও আশা-আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে কোনো ধরনের উন্নয়ন কিংবা কাঙ্ক্ষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়া সম্ভব নয়।
তারেক রহমান বলেন, “এই শ্রমজীবী মানুষরাই দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি, যাঁদের ঘাম-রক্তের বিনিময়ে আমাদের রপ্তানি খাত থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এগিয়ে চলছে। অথচ তারাই আজ অবহেলিত, অধিকার থেকে বঞ্চিত।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে যদি সত্যিকারের সংস্কার ও পরিবর্তন আনতে হয়, তাহলে তা হতে হবে একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকারের মাধ্যমে। নির্বাচন এবং সংস্কার—এই দুটি বিষয়কে একে অপরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা চলছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকিস্বরূপ।”
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সমর্থন দিয়ে রাখা কোনওভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ, এই ধরনের ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে স্বৈরাচারী শক্তি পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “যখন রাষ্ট্রক্ষমতা একটি ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ে এবং সেই ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু হয়, তখনই জন্ম নেয় ফ্যাসিবাদ। এই বিপদ থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক সরকার গঠন আবশ্যক।”
তিনি শেষমেশ সকল রাজনৈতিক শক্তিকে আহ্বান জানান—জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে, এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য।
Post a Comment