কাশ্মীর হামলা: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

 কাশ্মীর হামলা: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট


                                                         



ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর শ্রীনগরের একটি এলাকায় টহলরত ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরাফাইল ছবি: এএফপি






পাকিস্তান বলছে, ভারত হামলা চালাতে পারে—ইতিহাস কী বলছে?

পাকিস্তান জানিয়েছে, তাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ রয়েছে যে ভারত খুব শিগগিরই পাকিস্তানে একটি সামরিক অভিযান চালাতে পারে। এই দাবি সামনে আসার পর উপমহাদেশে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

এরই মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার ও বুধবার একাধিক নিরাপত্তা বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠক এবং কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রক্তক্ষয়ী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সম্ভাব্য সামরিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এই হামলার পর দুই প্রতিবেশী দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক চোখে পড়ার মতোভাবে অবনতি হয়েছে। তারা কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করছে, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্থগিত করেছে এবং একে অপরের নাগরিকদের বহিষ্কার করার মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে।

কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে পুরো উপমহাদেশে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—পেহেলগাম হামলার জবাবে ভারতের সামরিক প্রতিক্রিয়া কতটা বাস্তবসম্মত? অতীতে এমন ঘটনায় ভারত কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে? ইতিহাস সেই প্রশ্নের কিছুটা উত্তর দিতে পারে।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার গতকাল সকালে টেলিভিশনে এক বক্তব্যে বলেন, ইসলামাবাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ রয়েছে যে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে ভারত।

কখনো কখনো শত্রুপক্ষকে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি অস্বস্তিতে ফেলার জন্য প্রকাশ্য আক্রমণ চালানো হয়। রাজনৈতিক দিক থেকেও এতে কোনো ক্ষতি হয় না।

তারার আরও বলেন, পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগের ‘অজুহাতে’ ভারত এ পদক্ষেপ নিতে পারে। ভারত পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুললেও ইসলামাবাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।





কাশ্মীরের একটি অংশ ভারত ও আরেক অংশ পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ করে। তবে পুরো অঞ্চলটি নিজেদের বলে দাবি করে উভয় দেশ।

আতাউল্লাহ তারার এমন সময় ওই বক্তব্য দিলেন যখন নরেন্দ্র মোদি নিরাপত্তা ইস্যুতে নেতাদের সঙ্গে একটি গোপন বৈঠকে ভারতের সেনাবাহিনীকে পেহেলগাম হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য ‘সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। একাধিক সংবাদ সংস্থা সরকারের উচ্চপদস্থ সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই আরও ২৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত। দেশটির আম্বালা বিমানঘাঁটিতে একটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান
পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই আরও ২৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত। দেশটির আম্বালা বিমানঘাঁটিতে একটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ভারতের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দূরদর্শন জানায়, গতকাল মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির এক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মোদি। পেহেলগাম হামলার ঘটনার পর এটি ছিল তাঁদের দ্বিতীয় বৈঠক।


https://experimentscalp.com/zfzf74p0t3?key=7f24f7040ea7e97aaa0a9bb92f4e7146


এদিকে দুই প্রতিবেশী দেশ যখন কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) গোলাগুলি অব্যাহত রেখেছে, তখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের নেতারা উত্তেজনা প্রশমিত করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়িয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তাদের বলছি, পরিস্থিতি উত্তেজনাকর না করতে।’ মার্কো রুবিও গতকাল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র মঙ্গলবার জানান, মহাসচিব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ‘উত্তেজনা কমাতে’ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

ভারত কোন ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে

ভারত কোন ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে অতীতে দেশটি বিভিন্ন সামরিক কৌশল ব্যবহার করেছে। সেগুলোর কয়েকটি হলো—

গোপন সামরিক অভিযান

এ ধরনের অভিযানের ঘোষণা দেওয়া হয় না। গত কয়েক দশকে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের ভূখণ্ডে একাধিক গোপন আক্রমণ চালিয়েছে। মূলত সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো ও সেনাদের হত্যা করা হয়।

কয়েক বছর ধরে ভারতের এমন দাবি ক্রমেই জোরালো হয়েছে যে নয়াদিল্লি যেন পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর পুনরুদ্ধার করে। পেহেলগাম হামলার পর সেই দাবি আরও তীব্র হয়েছে। এমনকি বিরোধী কংগ্রেস পার্টির নেতারাও মোদি সরকারকে ওই অঞ্চল পুনর্দখলের আহ্বান জানাচ্ছেন।

কিন্তু এ ধরনের আক্রমণের কথা কখনো নিশ্চিত করা হয় না। এর উদ্দেশ্য হলো, শত্রুদেশকে একটি বার্তা পাঠানো, প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য করা নয়। এ ক্ষেত্রে উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি এড়ানোর বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়।

প্রকাশ্য ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক

কখনো কখনো শত্রুপক্ষকে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি অস্বস্তিতে ফেলার জন্য প্রকাশ্য আক্রমণও চালানো হয়। রাজনৈতিক দিক থেকেও এতে কোনো ক্ষতি হয় না।

ভারত অতীতে বহুবার নিয়ন্ত্রণরেখায় বিশেষ লক্ষ্যবস্তুতে এ ধরনের ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ পরিচালনা করেছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে এমন হামলা চালানো হয়েছিল।

ওই সময় ভারতশাসিত কাশ্মীরের উরিতে সশস্ত্র হামলাকারীরা ১৭ জন ভারতীয় সেনাকে হত্যা করেন। এর জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ দল হামলাকারীদের সম্ভাব্য ঘাঁটিতে আক্রমণ চালাতে কার্যত সীমান্ত পাড়ি দেয়। নয়াদিল্লির দাবি অনুযায়ী, সেখান থেকে সন্ত্রাসীরা আবারও ভারতে হামলার ছক কষছিলেন।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল রণবীর সিং এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘এ অভিযানের মূল উদ্দেশ্য, সন্ত্রাসীরা যাতে ভারতে অনুপ্রবেশ করে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে ভারতীয়দের জীবন বিপন্ন করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

ভারত দাবি করেছিল, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে বহু হামলাকারী নিহত হয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র বিশ্লেষকেরা মনে করেন, নিহতের সংখ্যা সম্ভবত অনেক কম ছিল।





আকাশপথে হামলা

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ জন ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য নিহত হন। দেশটিতে জাতীয় নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে এ ঘটনা ঘটে। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ।

ভারতের মানুষের প্রচণ্ড ক্ষোভের মধ্যে দেশটির বিমানবাহিনী পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আকাশপথে আক্রমণ চালায়। ভারতের দাবি, তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে বহু যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

তবে পাকিস্তান জোর দিয়ে বলেছিল, ভারতীয় যুদ্ধবিমান শুধু একটি বনাঞ্চলে আঘাত করেছে। এতে কোনো যোদ্ধা নিহত হননি।

এ ঘটনার এক দিন পর ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান আবার মুখোমুখি হয়। পাকিস্তান ভারতের একটি বিমান ভূপাতিত ও এক ভারতীয় বৈমানিককে গ্রেপ্তার করে। অবশ্য কয়েক দিন পর তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।

পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত ভূমি দখলের চেষ্টা

কয়েক বছর ধরে ভারতের এমন দাবি ক্রমেই জোরালো হয়েছে যে নয়াদিল্লি যেন পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর পুনরুদ্ধার করে। পেহেলগাম হামলার পর সেই দাবি আরও তীব্র হয়েছে। এমনকি বিরোধী কংগ্রেস পার্টির নেতারাও মোদি সরকারকে ওই অঞ্চল পুনর্দখলের আহ্বান জানাচ্ছেন।

পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর পুনরুদ্ধার করা ভারতের প্রতিটি সরকারের নীতিগত লক্ষ্য থাকলেও উভয় দেশের প্রায় সমান সামরিক সক্ষমতার কারণে এমন উদ্যোগ নেওয়া বাস্তবে খুব একটা সম্ভব নয়।

পর্যটকদের ওপর হামলার পর কাশ্মীরের পেহেলগামে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে
পর্যটকদের ওপর হামলার পর কাশ্মীরের পেহেলগামে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে
ফাইল ছবি: এএফপ




তবু পাকিস্তানের কাছ থেকে বিতর্কিত অঞ্চল দখল করার ক্ষেত্রে ভারতের সফল ইতিহাস রয়েছে।

১৯৮৪ সালে ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনী ‘অপারেশন মেঘদূত’ চালায়। এর মাধ্যমে তারা হিমালয়ের সিয়াচেন হিমবাহ দ্রুত দখল করে নেয় এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ গিরিপথগুলো আটকে দেয়। সিয়াচেন তখন থেকে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে; যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক চৌকিগুলো এখনো মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

নৌবাহিনীর অভিযান

পেহেলগাম হামলার পর ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে।

২৭ এপ্রিল নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজগুলো একাধিক সফল জাহাজ–বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মাধ্যমে দূরপাল্লার নির্ভুল আক্রমণের জন্য এ বাহিনী তাদের ব্যবস্থাপনা এবং ক্রুদের প্রস্তুতি যাচাই ও প্রদর্শন করেছে।

পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাত

ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীনতার পর ৭৮ বছরে চারবার যুদ্ধে জড়িয়েছে। এর মধ্যে তিনটি যুদ্ধই হয়েছে কাশ্মীর নিয়ে।

১৯৪৭ সালের আগস্টে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার উপমহাদেশ থেকে চলে যাওয়ার পর দুই মাসের মধ্যে প্রথম কাশ্মীর যুদ্ধ শুরু হয়। তখন অঞ্চলটি শাসন করতেন একজন রাজা।

আরও পড়ুন

পাকিস্তানি মিলিশিয়ারা কাশ্মীরে আক্রমণ করে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার রাজা হরি সিং ভারতের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। দিল্লি সাহায্য করতে রাজি হয় এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দেয়। তবে শর্ত ছিল, কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে একীভূত করতে রাজাকে একটি চুক্তি সই করতে হবে। রাজা হরি সিং ভারতের এ শর্ত মেনে নেন।

১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে এ যুদ্ধের অবসান হয়। এর পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীরের একেক অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

১৯৬৫ সালে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষ একটি সর্বাত্মক যুদ্ধে রূপ নেয়। পাকিস্তানি বাহিনী অস্ত্রবিরতি রেখা অতিক্রম করে ভারতশাসিত কাশ্মীরে প্রবেশ করে। আর ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের লাহোরে হামলা চালায়। দুই পক্ষেই বহু প্রাণহানির পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে এ যুদ্ধের অবসান ঘটে।

১৯৯৯ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করলে কারগিল যুদ্ধ বাধে। লাদাখ অঞ্চলের বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটেন।                                           






Post a Comment

Previous Post Next Post