কাশ্মীর সীমান্তে টানা চতুর্থ দিন ভারত-পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি চলছে।
শ্রীনগরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সেনাপাহারা জোরদার করা হয়েছে। ২৮ এপ্রিল ২০২৫ছবি: রয়টার্
কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গতকাল রোববার দিবাগত রাতেও গোলাগুলি হয়েছে। শ্রীনগরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর টানা চতুর্থ রাতের মতো দুই দেশের সেনাদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হলো।
আজ সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে, নিয়ন্ত্রণরেখাজুড়ে পাকিস্তান ‘বিনা উসকানিতে’ গুলি চালিয়েছে, যার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে তারা।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীরা গুলি করে ২৬ জন পর্যটককে হত্যা করে। ভারত দাবি করেছে, হামলায় জড়িত তিন সন্দেহভাজনের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার ঘটনায় ভারতজুড়ে ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবিতে দেশজুড়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। নয়াদিল্লি অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদে মদদ জোগায়। উল্লেখ্য, কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশই পুরো অঞ্চল নিজেদের অংশ বলে দাবি করে এবং এর আগে দুইবার কাশ্মীর নিয়ে তাদের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে।
পেহেলগামের হামলার পর থেকে পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশের সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে গেছে। ভারত সিন্ধু নদ পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে, আর পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রোববার দিবাগত রাতে নিয়ন্ত্রণরেখায় (৭৪০ কিমি দীর্ঘ) একাধিক পাকিস্তানি সেনা চৌকি থেকে 'বিনা উসকানিতে' গুলি চালানো হয়। এর জবাবে ভারতীয় বাহিনীও ছোট অস্ত্র দিয়ে পাল্টা গুলি চালায়। তবে সেনাবাহিনী এ ঘটনায় হতাহতের কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
পেহেলগামের ঘটনার পর ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশজুড়ে একাধিক সামরিক মহড়া চালিয়েছে, যার বেশ কিছু নিয়মিত প্রস্তুতিমূলক মহড়া বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
এদিকে, আজ সোমবার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের সন্ধানে নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় এক হাজার বাড়ি ও বনাঞ্চলে অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রায় ৫০০ জনকে আটক করা হয়েছে এবং অন্তত নয়টি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
Post a Comment